প্রাথমিক তথ্য
মাটির প্রকার, ভৌত রাসায়নিক অবস্থা, আবহাওয়া, সারের প্রকার ও পরিমাণ, ফসলের প্রকার ও শেকড়ের প্রকৃতি, খাদ্য পরিশাষেণ ক্ষমতা ইত্যাদি ভেদে সার প্রয়োগ বিভিন্নভাবে হয়ে থাকে। তবে সার প্রয়োগ যখন জমি তৈরির শেষ সময়ে করা হয় তাকে মৌল বা প্রাথমিক প্রয়োগ ধরা হয় এবং পরবর্তীতে যতবারই দেয়া হয় তাকে উপরি প্রয়োগ ধরা হয়। প্রাথমিক প্রয়োগ করা সারগুলোকে ফসলের শেকড়ের নাগালের মধ্যে দেয়া দরকার এবং ধীরে ধীরে দ্রবণের জন্য আগাম প্রয়োগ করে ফসলের প্রয়োজনের সময় পরিশাষেণ উপযোগী করা। এর ফলে সারের রাসায়নিক বিক্রিয়ার প্রভাবে বীজ/চারা ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে না।
প্রাথমিক সার প্রয়োগ বিভিন্ন পদ্ধতিতে হতে পারে। যেমনঃ
(ক) ছিটিয়ে প্রয়োগ,
খ) স্থানীয় প্রয়োগ
১। চারার গর্তে
২। মাদায় প্রয়োগ
৩। লাঙ্গল স্তরে প্রয়োগ
৪। বীজ বপন যন্ত্রের সাহায্যে প্রয়োগ ও
৫। সিরিঞ্জের ন্যায় প্রবিষ্ঠকরণ পদ্ধতি।
প্রয়োজনীয় উপকরণ-
১। সার, ২। আগার/নিড়ানী/খতা/কোদাল, ৩। সাবল, ৪। লাংগল, ৫। মই, ৬। বীজ বপন যন্ত্র, ৭। সার প্রবিষ্ঠকরণ যন্ত্র, ৮। সার, ৯। খাতা কলম ইত্যাদি।
কাজের ধাপ
১. জমি চাষের শেষ পর্যায়ে অর্থাৎ শেষ চাষের পূর্বে জমিতে মই দেওয়ার আগে ধীরে ধীরে পরিশাষেণ উপযোগী হয়। এ সমস্ত সারগুলোকে ছিটিয়ে প্রয়োগ করতে হয়। যেমন ফসফরাস, এমওপি, জিপসাম, জৈব সার, চুন, ডিএপি, জিংক ইত্যাদি। এসমত সার প্রয়োগ করাকে মৌল/প্রাথমিক প্রয়োগ বলা হয় ।
২. প্রাথমিক/মৌল সার প্রয়োগের পর আড়াআড়িভাবে মই দিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। স্বল্প মেয়াদি ও ঘন করে ছিটিয়ে যে সমস্ত শাক-সবজি বপন করা হয় সেক্ষেত্রে এ পদ্ধতি বেশি প্রযাজ্যে।
৩. অনুর্বর জমি হলে ফসলের শিকড়ের কাছাকাছি সার দেয়ার জন্য মৌল সারের ৫০% চারা বা বীজের কাছাকাছি। দিতে হবে। যেমন: ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটোর চারা রোপণের গর্তে মিশিয়ে দিতে হবে।
৪. লাউ, শশা, কুমড়া জাতীয় গাছের মাদায় বীজ রোপণের পূর্বে মাটির সাথে ৫০% মৌল সার মিশিয়ে দিতে হবে।
৫. ধনে, মূলা, সিলারী, গিমা কলমির বীজ বপনের পূর্বে লাংগল দিয়ে অগভীর নালা করে সেখান দিয়ে সার ছিটিয়ে। হালকা মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। এর উপর দিয়ে বীজ বুনে মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।
৬. বীজ বপন যন্ত্রে বীজের সাথে পাশাপাশি বাক্সে সার দিতে হয়।
৭. বীজ বপন যন্ত্র টেনে নিলে বীজ বপনের পাশাপাশি সারও আতে আতে ফারায়োর বা নালার মধ্যে পড়বে। এর পিছনে মই টেনে বা পা দিয়ে মাটি টেনে দিলে বীজ ঢেকে যাবে। এতে বীজের কাছাকাছি সার থাকবে এবং বীজ গজানোর পর শেকড় ছাড়ার সাথে সাথে সার হতে পুষ্টি উপাদান পরিশাষেণ করতে পারবে।
৮. সিরিঞ্জ বা প্রবিষ্ঠকরণ যন্ত্রের ভিতর সার ভর্তি করা হয়। রোপিত অথচ কিছুটা বড় গাছ/চারার গোড়া হতে ৭/৮ সেমি. হতে ১০/১৫ সেমি. দূরে সিরিঞ্জের ফলা/মাথা মাটিতে প্রবেশ করানো হয়। এরপর উপরের হাতলে চাপ দিলে নির্দিষ্ট পরিমাণ সার মাটির অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। সার প্রবেশ করানারে পর ছিদ্রের মুখ বন্ধ করে দিতে হয়।
আরও দেখুন...